হায় রে, আমার এ বদনসিব
হ'ত যদি মনের মত!
কিংবা গ্রহের চক্র ঘুরে
আবার আমার বন্ধু হত!
পালিয়ে যেত যৌবন মোর
যখন হাতের মুঠি হ'তে,
রেকাব সম রাখত ধ'রে
এই জরারে সমুন্নত!!



তোমার হাতের সকল কাজে
হবে শুভ নিরবধি-
প্রিয়, তোমার ভাগ্যবশে
নিয়তির এই নির্দেশ যদি;
দাও তাহলে পান করে নিই
তোমার দেওয়া শিরীন শরাব,
হ'লেও হব চির-অমর,
হয়ত ও-মদ সুধা-নদী!!



পরান ভরে পিয়ে শরাব,
জীবন যাহা চিরকালের।
মৃত্যু-জরা-ভরা জগৎ
ফিরে কেহ আসবেনা ফের।
ফুলের বাহার, গোলাব- কপোল,
গেলাস- সাথী মস্ত-ইয়ার,
এক লহমার খুশির তুফান,
এইতো জীবন!- ভাবনা কিসের!!



চন্দ্র- সূর্য রাত্রি দিবা
বিচিত্র সে আবেগ ভরে
ওগো প্রিয়, দেখি- তোমার
ধূলির 'পরে প্রণাম করে!
হৃদয় আঁখির সাধ হতে মোর
করো না গো নিরাশ মোরে,
রইবে ন্দূরে- বসিয়ে আমায়,
প্রতীক্ষার ঐ অগ্নি পরে?



তারি আমি বান্দা গোলাম,
সৌখিন যে রস- পিয়াসী।
গলায় যাহার দোলায় বিধি
পাগল প্রেমের শিকলি ফাঁসি!
প্রেমের এবং প্রেম জানানোর
স্বাদ অ-রসিক বুঝবে কিসে?
পান করে এ সুরার ধারা,
সুর- লোকের রুপ- বিলাসী!!



রবি, শশী, জ্যোতিষ্ক সব,
বান্দা তোমার, জ্যোতির্মতি!
যেদিন হ'তে বান্দা হ'ল
পেল আঁধার -হরা জ্যোতি!
রাগে- অনুরাগে মেশা
তোমার রুপের রৌশনীতে
চন্দ্র হ'ল স্নিগ্ধ-কিরণ,
সূর্য হল দীপ্ত অতি!!



আমার সকল ধ্যানে জ্ঞানে,
বিচিত্র সে সুরে সুরে
গাহি তোমার বন্দনা গান,
রাজাধিরাজ, নিখিল জুড়ে!
কী বলেছে তোমার কাছে
মিথ্যা ক'রে আমার নামে
হিংসুকেরা,- ডাকলে না আজ,
তাইতে আমায় তোমার পুরে!!



তোমার পথে মোর চেয়ে কেউ,
সর্বহারা নাই কো, প্রিয়!
আমার চেয়ে তোমার কাছে,
নাই সখি, কেউ অনাত্নীয়!
তোমার বেণীর শৃংখলে গো
নিত্য আমি বন্দী কেন?
মোর চেয়ে কেউ হয়নি পাগল,
পিয়ে তোমার প্রেম- অমিয়!!



যদিও মদ নিষিদ্ধ ভাই, যত পার মদ চালাও,
তিনটি কথা স্মরণ রেখে; কাহার সাথে মদ্য খাও?
মদ- পানের কি যোগ্য তুমি? কি মদই বা করেছ পান?-
জ্ঞান পেকে না ঝুনো হলে মদ খেয়ো না এক ফোঁটাও।


১০
তোমার দয়ার পেয়ালা প্রভু উপচে পড়ুক আমার'পর
নিত্য ক্ষুধার অন্ন পেতে না যেন হয় পাততে কর।
তোমার মদে মস্ত করো আমার 'আমি'র পাই সীমা,
দুঃখে যেন শির না দুখায় অতঃপ্র, হে দুঃখহর!


১১
দুঃখে আমি মগ্ন প্রভু, দুয়ার খোলো করুণার!
আমায় করো তোমার জ্যোতি, অন্তর মোর অন্ধকার।
স্বর্গ যদি অর্জিতে হয় এতই পরিশ্রম করে-
সে ত আমার পারিশ্রমিক, নয় সে দয়ার দান তোমার।